১. ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণঃ
ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে নির্বাচন পরিচালনার সকল ধাপে দক্ষতা ও পেশাদারিত্ব নিশ্চিত করা সম্ভব হয়। বিশেষ করে প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসারগণ যদি পূর্ব প্রস্তুতি এবং নিয়মিত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হন, তাহলে তারা ভোট গ্রহণের দিন দায়িত্ব পালনে আরও সচেতন, সুশৃঙ্খল ও নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখতে পারেন। এতে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য হয় এবং ভোটারদের আস্থাও বৃদ্ধি পায়। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মকর্তারা ইভিএম/ব্যালট পরিচালনা, আইনগত নির্দেশনা, জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলা ও আচরণবিধি বাস্তবায়নের বিষয়গুলো সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা লাভ করেন, যা নির্বাচন ব্যবস্থাপনায় গুণগত পরিবর্তন আনে।
২. রেজিস্ট্রেশন টিম, তথ্যসংগ্রাহক ও সুপারভাইজারদের প্রশিক্ষণঃ
ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমের নির্ভুলতা ও নিরবচ্ছিন্নতা অনেকাংশেই নির্ভর করে মাঠপর্যায়ের রেজিস্ট্রেশন টিম, তথ্যসংগ্রাহক ও সুপারভাইজারদের দক্ষতার উপর। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তারা নাগরিক তথ্য সঠিকভাবে সংগ্রহ, যাচাই ও নথিভুক্ত করতে সক্ষম হন। বিশেষ করে জন্ম তারিখ, ঠিকানা, জাতীয় পরিচয়পত্রের বৈধতা, ছবি ও বায়োমেট্রিক তথ্য গ্রহণের মতো স্পর্শকাতর বিষয়গুলোতে যথাযথ প্রশিক্ষণ না থাকলে ভুলের আশঙ্কা থাকে। সেজন্য এসব দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীদের পর্যাপ্ত ও নিয়মিত প্রশিক্ষণ প্রদান করলে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম সুষ্ঠু, নির্ভুল এবং সময়োপযোগীভাবে সম্পন্ন হয়, যা পরবর্তীতে সুষ্ঠু নির্বাচনের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।
জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) ও স্মার্টকার্ড বিতরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর সরকারি সেবা। এ সংক্রান্ত কার্যক্রমে সম্পৃক্ত কর্মকর্তাগণ যদি সুনির্দিষ্ট প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হন, তাহলে কার্ড বিতরণ, তথ্য যাচাই, এবং নাগরিকদের সেবা প্রদান কার্যক্রম আরও দক্ষ, নির্ভুল ও জনবান্ধব হয়। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তারা স্মার্টকার্ড বিতরণের প্রক্রিয়া, প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট যাচাই, কার্ড হস্তান্তরের নিয়ম, এবং বিতরণকালীন সাধারণ জটিলতা সমাধানের কৌশল সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা লাভ করেন। পাশাপাশি, জনসচেতনতা, শৃঙ্খলা রক্ষা এবং ভিড় ব্যবস্থাপনার মতো বিষয়েও প্রশিক্ষণ প্রদান করলে বিতরণ কার্যক্রম আরও সুশৃঙ্খল ও নিরাপদভাবে সম্পন্ন হয়। এই প্রশিক্ষণ নাগরিক সেবাকে সহজতর ও স্বচ্ছ করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
বর্তমানে নির্বাচন পরিচালনায় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের ব্যবহার সময়ের দাবি। অনলাইন মনোনয়নপত্র গ্রহণ ও যাচাই সংক্রান্ত কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ অপরিহার্য। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তারা অনলাইন মনোনয়ন দাখিল, যাচাই-বাছাই, আপত্তি নিষ্পত্তি এবং মনোনয়ন বাতিল/গৃহীত সংক্রান্ত আইনি ও প্রযুক্তিগত বিষয়গুলোতে দক্ষতা অর্জন করেন। সফটওয়্যারভিত্তিক এই কার্যক্রমে তথ্য সঠিকভাবে এন্ট্রি করা, প্রয়োজনীয় সংযুক্তি যাচাই, সময়মতো মনোনয়ন যাচাই ও প্রতিবেদন প্রেরণ ইত্যাদি কার্যক্রমে কোনো ধরনের ত্রুটি যেন না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে কার্যকর ও বাস্তবভিত্তিক প্রশিক্ষণ প্রদান আবশ্যক। এ প্রশিক্ষণ মনোনয়ন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও গতিশীলতা নিশ্চিত করে, যা অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পূর্বশর্ত।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস